জেনে নিন ব্যাংক একাউন্ট সম্পর্কে খুটিনাটি এবং কিভবে ব্যাংক একাউন্ট খুলবেন? কি কি লাগবে?

আপনার বয়স যদি হয় ১৮ এর উর্দ্ধে তাহলে ব্যাংক একাউন্ট থাকা আপনার জন্য সত্যি অনেক গুরুত্বপূর্ণ ।
অনেকে মনে করে আমি তো ব্যাবসায়ি না তা হলে ব্যাংক একাউন্ট ‍দিয়ে আমি কি করবো, বা ব্যাংক একাউন্ট আমার কি কাজে আসবে? আবার অনেকের ধারণা ব্যাংকে হিসাব খোলা অনেক ঝামেলার কাজ। আসলেই কি তাই?
আপনাদের এই ভুল ধারনা গুলো ভাঙ্গতেই আমার আজকের এই টপিক।




বর্তমানে ব্যাংকে একাউন্ট থাকাটা আমাদের জীবনের অপরিহার্য একটি অংশ হয়ে দাড়িয়েছে। শুধু ব্যাবসায়িক না, ব্যাক্তিগত জীবনেও এর গুরুত্ব অপরিসীম।আপনার টাকা সবচেয়ে নিরাপদে রাখতে ব্যাংক ছাড়া আর বিকল্প উপায় খুব কমই আছে, এছাড়াও বিভিন্ন আর্থিক লেনদেনসহ নিত্য প্রোয়োজনীয় অনেক কাজ করা হয় ব্যাংকের মাধ্যমেই।তাই বর্তমান সময়ের সাথে নিজেকে এগিয়ে নিতে ব্যাংক একাউন্ট থাকাটা সত্যিই খুব জরুরী!

তো চলুন জেনে নেয়া যাক ব্যাংক একাউন্ট সম্পর্কে কিছু প্রোয়োজনীয় তথ্য। তারপর জানবো কিভাবে একটি ব্যাংক একাউন্ট খুলবেন খুব সহজেই কোনও প্রকার ঝামেলা ছাড়াই!

ব্যাংক একাউন্টের প্রাকারভেদ


১. চলতি হিসাব বা কারেন্ট একাউন্ট: কারেন্ট অ্যাকাউন্ট থেকে দিনে যত বার খুশি তত বার টাকাপয়সা লেনদেন করা যায়। যেকোনো সময় টাকা তোলা যায় এবং জমা রাখা যায়।বিশেষত ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য এ ধরনের হিসাব খোলা হয়। এ ধরনের একাউন্টে কোনও প্রকার সুদ বা ইন্টারেস্ট দেয়া হয় না । বরং বছর শেষে কিছু সার্ভিস চার্জ কেটে নেয়া হয়।

২. সঞ্চয়ী হিসাব বা সেভিং একাউন্ট: যেকোনও সাধারন ব্যাক্তি বা ব্যাবসায়ী সবাই এ একাউন্ট খুলতে পারে। সঞ্চয়ী হিসাবেও যেকোনও সময় টাকা জমা রাখা বা উত্তলন করা যায় তবে এ ক্ষেত্রে কিছুটা লিমিট আছে। এধরনের একাউন্টে সাধারনত ৪% থেকে ৬% হারে সুদ দেয়া হয়ে থাকে। আপনি চেক বা এটিএম কার্ডের মাধ্যমে খুব সহজে টাকা উত্তলন করতে পরবেন ।

৩. ডিপিএস (ডিপোজিট পেনশন স্কিম) একাউন্ট: এ ধরনের অ্যাকাউন্ট ৫ বছর, ১০ বছর বা ২০ বছর মেয়াদী হয়। সাধারণত, ৫ বছর মেয়াদী ডিপিএসের জন্য বার্ষিক ১০%, আর ১০ ও ২০ বছর মেয়াদী ডিপিএসের জন্য বার্ষিক ১৫% হারে সুদ প্রদান করা হয়। তবে ব্যাংক ভেদে এ সুদের পরিমাণ ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে।প্রতি মাসে একটি নির্দিষ্ট অংকের টাকা জমা রাখতে হয় ধরনের অ্যাকাউন্টে, সাধারণত ৫০০ টাকা থেকে শুরু করে ১০০০০ টাকা পর্যন্ত মাসিক কিস্তি দেয়া যায়।

৪। এফডিআর (ফিক্স ডিপোজিট রিসিট) অ্যাকাউন্ট: এফডিআর অ্যাকাউন্ট হচ্ছে বড় অংকের টাকা নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য ব্যাংকে জমা রাখা এবং এর বিপরীতে ব্যাংক থেকে মাসিক, পাক্ষিক, অর্ধবার্ষিক কিংবা বার্ষিক হিসেবে সুদের টাকা গ্রহন করা।এধরনের একাউন্টে সুদের পরিমাণ বার্ষিক প্রায় ৯% থেকে ১২% পর্যন্ত হয়ে থাকে। সাধারণত ২৫ হাজার টাকার কমে এফডিআর অ্যাকাউন্ট করা যায় না।

অনেক বকবক তো করা হলো চলুন এবার আসল কথায় আসি কোথায় এবং কিভাবে ব্যাংক একাউন্ট খুলবেন।

কোন ব্যাংকে একাউন্ট খুলবেন?

কোন ব্যাংকে একাউন খুলবেন সেটা আপনার নিজেকেই একটু ভেবে নিতে হবে, কারন এটা আপনার ব্যাক্তিগত সুবিধার উপর নির্ভর করে। ব্যাংকের কতগুলো শাখা আছে, আপনার বাসা বা কর্মস্থল থেকে দূরত্ব কত, অনলাইন বা এটিএম কার্ড সুবিধা, ব্যাংক চার্জ, ইন্টারেস্ট ব্যাংকের নীতিমালা গুলো সম্পকে জেনে, ভালো মত বুঝে শুনে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

কি কি কাগজপত্র ও তথ্যের প্রয়োজন হয়:


১. পূরণকৃত ফর্ম: আপনি যে ব্যাংকে একাউন্ট খুলতে চান সেই ব্যাংকের যে কোনও শাখা থেকে একটি ফর্ম সংগ্রহ করুন।
২. ছবি: আপনার নিজের দুই কপি ও নমিনীর ১ কপি সত্যায়িত ছবি লাগবে ।
৩.কাগজপত্র: আপনার নিজের পরিচয়পত্রের ফটোকপি লাগবে। এক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্র ও কমিশনার/ মেয়র/ চেয়ারম্যান কর্তৃক প্রদত্ত নাগরিক সনদ সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য। উক্ত পরিচয়পত্রের অনুপস্থিতিতে পাসপোর্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্স, জন্ম সনদ, চাকরি পরিচয়পত্র, স্টুডেন্ট আইডি কার্ড ইত্যাদি থেকে যেকোনো দুইটি উপস্থাপন করতে হবে ।
৪. পরিচয়দানকারী: সাধারণত ঐ ব্যাংকের কোন গ্রাহক পরিচয়দানকারী হতে পারবেন । সেভিং একাউন্ট খুলতে হলে কেবল অন্য কোনো সেভিং একাউন্ট হোল্ডার গ্রাহক পরিচয়দানকারী হতে পারবেন। পরিচয়দানকারী অ্যাকাউন্ট ফর্মের নির্ধরিত স্থানে নমুনা স্বাক্ষর, নাম, ঠিকানা, অ্যাকাউন্ট নম্বর ইত্যাদি লিখবেন ও অ্যাকাউন্ট পরিচালনাকারীর ফটোগুলি সত্যায়িত করবেন।
৫. নমিনী: আপনার মা বাবা বা কছের কোনও আত্নীয় সজনদের কে নমিনী হিসেবে রাখতে পারবেন । নমিনীর স্বাক্ষর প্রয়োজন নেই। তবে নাম-ঠিকানা দিতে হবে। নমিনীর যেকোন একটি পরিচয়পত্র দিলে ভালো হয়।
৬. টাকা: নির্ধরিত জমা স্লিপ পূরণ করে টাকা জমা দিতে হবে। সঞ্চয়ী ও চলতি হিসাবের জন্য ব্যাংক ভেদে ১০০০ থেকে ২০০০ টাকা লাগবে। ডিপিএস এর জন্য কিস্তি সমপরিমাণ ও এফডিআর এর জন্য এফডিআর সমপরিমাণ টাকা লাগবে।

এখানে উল্লেখিত যাবতীয় কাগজ পত্র ও আনান্য প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো নিয়ে ব্যাংকে জমা দিয়ে আবেদনের মাধ্যমে আপনিও হয়ে যান একজন সম্মানিত ব্যাংক একাউন্ট হোল্ডার !

আজ এপ্রযন্তই আপনাদের যদি আরো কিছু জানার থাকে তাহলে আবশ্যই কমেন্ট বক্সে আমাদের কে জানাবেন, ধন্যবাদ
জেনে নিন ব্যাংক একাউন্ট সম্পর্কে খুটিনাটি এবং কিভবে ব্যাংক একাউন্ট খুলবেন? কি কি লাগবে?  জেনে নিন ব্যাংক একাউন্ট সম্পর্কে  খুটিনাটি এবং কিভবে ব্যাংক একাউন্ট খুলবেন? কি কি লাগবে? Reviewed by Rakesh Barman on July 23, 2019 Rating: 5
Powered by Blogger.