কেন ওয়াই-ফাই রাউটার?
শুধু একটি ফোনে ইন্টারনেট ব্যবহার করলে প্রয়োজন অনুযায়ী ইন্টারনেট প্যাকেজ চালু করে নেওয়া যেতে পারে। কিন্তু ইন্টারনেট যদি একাধিক মোবাইলে ব্যবহার করতে হয় তবে আর এক প্যাকেজ দিয়ে ব্যবহার সম্ভব নয়। প্রথমত ফোন বা ডেস্কটপে যুক্ত ইন্টারনেট সংযোগটি অন্য যন্ত্রগুলোর সঙ্গে ভাগাভাগি করার সুযোগ নেই। আরেকটি কারণ, মুঠোফোনের ইন্টারনেট প্যাকেজ তুলনামূলক ব্যয়সাপেক্ষ। একই খরচের ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট কিংবা ওয়াইম্যাক্স সংযোগে কয়েক গুণ বেশি গতির এবং বেশি ডেটা ভলিউমের প্যাকেজ ব্যবহার করা সম্ভব।
কাজের ধরন বুঝে রাউটার কিনুন
Wifi Router: একটি ইন্টারনেট সংযোগ থেকে একাধিক ব্যবহারকারী এবং একাধিক মুঠোফোন ও কম্পিউটারে ব্যবহার করার উপায় হলো সে সংযোগের সঙ্গে একটি ওয়াই-ফাই রাউটার যুক্ত করে নেওয়া। বাজারে বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যের বিভিন্ন ধরনের রাউটার আছে। কাজের ধরন অনুয়ায়ী বেছে নিতে হবে আপনার রাউটার। অতি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন সর্বাধুনিক প্রযুক্তির রাউটার যে কিনতেই হবে এমন নয়। বরং রাউটার কী ধরনের কাজের জন্য ব্যবহার করা হবে, তার ওপর নির্ভর করেই নির্বাচন করা উচিত।মাথায় রাখুন রাউটারের ব্যান্ড
সিঙ্গেল, ডুয়েল এবং ট্রাই ব্যান্ড রাউটার হয়ে থাকে। সহজভাবে বলতে গেলে যে কয়েকটি ব্যান্ড থাকে রাউটারে ওই সংখ্যক নেটওয়ার্ক পাওয়া যাবে। সিঙ্গেল ব্যান্ড রাউটারগুলোর ব্যবহার বেশি। এতে ২.৪ গিগাহার্টজের একটি নেটওয়ার্ক থাকে। ডুয়েল ব্যান্ডে ২.৪ গিগাহার্টজের পাশাপাশি ৫ গিগাহার্টজের আরও একটি নেটওয়ার্ক থাকে। ৫ গিগাহার্টজের নেটওয়ার্ক উচ্চগতিতে তথ্য আদান-প্রদান করতে পারে। কিন্তু এই উচ্চগতির কারণেই দেয়াল বা বড় কিছু অতিক্রম করে সিগন্যাল পাওয়া কষ্টসাধ্য হয়ে যায়।ট্রাই-ব্যান্ডের রাউটারে একটি ২.৪ গিগাহার্টজের এবং দুটি ৫ গিগাহার্টজের নেটওয়ার্ক থাকে। একাধিক নেটওয়ার্ক থাকার উদ্দেশ্য হলো উচ্চগতির যন্ত্র এবং তুলনামূলক কম গতির যন্ত্রগুলো যেন কোনো ধরনের সমস্যা ছাড়া তথ্য আদান-প্রদান করতে পারে।
আপনি যদি ওয়্যারলেস নেটওয়ার্কের গতি নিয়ে ভাবনায় থাকেন এবং একই সঙ্গে রাউটার থেকে ১০টির বেশি যন্ত্রে ব্যবহার করতে চান, তবেই কেবল ট্রাই-ব্যান্ড রাউটার কিনতে পারেন। বাসা বা ছোট অফিসের সাধারণ কাজে ব্যবহারের জন্য ২.৪ গিগাহার্টজের রাউটারই যথেষ্ট।
ওয়্যারলেস মান জেনে নিন
802.11 a, 802.11 b/g/n, 802.11 ac-এর মতো বেশ কয়েকটি ওয়্যারলেস মান রয়েছে। আপনার কম্পিউটারটি যদি গত কয়েক বছরের মধ্যে কেনা হয়ে থাকে তবে নিশ্চিতভাবেই ধরে নেওয়া যায় এটি 802.11n নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত হতে পারবে। প্রায় ছয় বছর ধরে এই নেটওয়ার্কই বেশি ব্যবহৃত হয়ে আসছে।802.11 ac নেটওয়ার্ক স্ট্যান্ডার্ডটি সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত হয়ে থাকলেও সব যন্ত্রে এখনো রাউটারের এই মান সমর্থন করছে না। কিন্তু আপনি যদি আপনার যন্ত্রগুলো হালনাগাদ করার পরিকল্পনা করে থাকেন তবে 802.11 ac স্ট্যান্ডার্ডের রাউটার কিনতে পারেন। সাধারণত এই রাউটারগুলোতে আগের স্ট্যান্ডার্ডের ডিভাইস যুক্ত করার সুযোগও থাকে।
বহনযোগ্য রাউটার
বিভিন্ন ব্র্যান্ডের তৈরি থ্রিজি নেটওয়ার্ক সমর্থন করে এমন বিভিন্ন মডেলের পোর্টেবল রাউটার বাজারে রয়েছে। এই ধরনের রাউটারের সঙ্গে যেকোনো মোবাইলের সিমকার্ড ব্যবহার করে রাউটার সক্রিয় করা যায়। কোনো কোনো টেলিযোগাযোগ সংযোগদাতা প্রতিষ্ঠান আবার নিজেরাই এই ধরনের যন্ত্রগুলো তাদের গ্রাহকসেবা কেন্দ্রের মাধ্যমে বিক্রি করে থাকে।
পোর্টেবল রাউটারের মাধ্যমে ওয়াইম্যাক্স ইন্টারনেট ব্যবহার করতে চাইলে নির্দিষ্ট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান থেকেই এই রাউটারগুলো কিনতে হবে। আবার এক প্রতিষ্ঠানের রাউটার অন্য প্রতিষ্ঠানের সংযোগের জন্য কার্যকর নয়। সেটাও মাথায় রাখতে হবে।
পোর্টেবল রাউটারগুলো পূর্ণ চার্জে সাধারণত তিন-পাঁচ ঘণ্টা ব্যবহার করা যায়। চলার পথে ব্যবহার করার জন্য এই রাউটারগুলো বেশ কার্যকর। এখানে খেয়াল রাখতে হবে, যেসব স্থান থেকে ব্যবহার করা হচ্ছে সেটি নেটওয়ার্কের আওতাভুক্ত কি না।
রাউটার ব্যবহারে যা জানতে হবে
* রাউটারের ওয়াই-ফাই সক্রিয় করার সময় ডিফল্ট নেটওয়ার্ক হিসেবে ওই রাউটারের নাম উল্লেখ থাকে এবং পাসওয়ার্ডও রাউটারে নিচের দিকে একটি স্টিকারে লেখা থাকে। প্রয়োজনে ব্যবহারের নির্দেশিকা দেখে পদ্ধতিটি জেনে নেওয়া যেতে পারে।* প্রথমবার রাউটার সংযুক্ত করে ওয়্যারলেস নেটওয়ার্কের নাম পরিবর্তন করে নেওয়া উচিত। পাশাপাশি নেটওয়ার্কের পাসওয়ার্ডও ব্যবহার করা উচিত। পাসওয়ার্ড দেওয়া না থাকলে যে কেউই রাউটারে যুক্ত হতে পারবে। ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য এমন অবস্থা কখনোই রাখা উচিত নয়।
* রাউটারের পাসওয়ার্ড ভুলে গেলে সেটি রিসেট বা পুনরায় নির্ধারণ করে নেওয়া যায়। সাধারণত রাউটারের পাশে একটি বোতাম চেপেই এই কাজটি করা যায়।
* রাউটার সাধারণত বাসার মাঝামাঝি স্থানে রাখা উচিত। এর ফলে অন্যান্য ঘর থেকে সহজে রাউটারের ওয়াই-ফাই সংযোগের সঙ্গে যুক্ত হওয়া যাবে।
* কত বড় জায়গায় ওয়াই-ফাই সংযোগ দিতে চান, তার ওপর নির্ভর করে রাউটার পছন্দ করুন।
* রাউটারে একই সঙ্গে একাধিক লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক সংযোগ যুক্ত করা হয়। অধিকসংখ্যক ল্যান সংযোগ যুক্ত করতে হলে রাউটার কেনার সময় সেটি দেখে নেওয়া উচিত।
আমাদের মজার মজার সব পোস্ট পেতে ফেইসবুক পেজ এ লাইক দিয়ে আমাদের সাথে থাকুন , ধন্যবাদ !!!!
আপনার অনুভুতি শেয়ার করুন:
রাউটার কেনার আগে জেনে নিন WIFI রাউটার সম্পর্কে কিছু প্রয়োজনিয় তথ্য?
Reviewed by Shawon sheikh
on
September 01, 2019
Rating:
No comments: